নিজের পোস্ট কোড কিভাবে বের করব? ডাকঘর পোস্ট কোড বের করা নিয়ম

পোস্ট কোড কিভাবে বের করব

আমাদের সবার জীবনে ডাকঘরের পোস্ট কোড একটি গুরুত্বপুন্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনার কখনো না কখনো পোস্ট কোডের প্রয়োজন পড়বেই। তাই আমাদের সকলের জানা প্রয়োজন আমরা নিজের পোস্ট কোড কিভাবে বের করব। অনেক মানুষই জানেনা ডাকঘরের পোস্ট কোড কিভাবে বের করতে হয়। এখন ইন্টারনেটের যুগে কোনো কিছু জানার জন্য আর মানুষকে জিজ্ঞাস করতে হয় না। আপনি ইন্টারনেটে একটি সার্চ করেই জানতে পারবেন সব কিছু।

তাই আজ আমরা আপনাদের কে দেখাবো এবং জানাবো কিভাবে আপনি ডাকঘরের পোস্ট কোড বের করতে পারেন। ইন্টারনেটে মাধ্যমে জানতে পারবেন এবং ইন্টারনেটে ছাড়া কিভাবে ডাকঘরের পোস্ট কোড বের করতে হয় সেটাও জানাবো। তাই আর দেরি না করে চুলুন পোষ্টি শুরু করা যাক।

ডাকঘর পোস্ট কোড কী? কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

পোস্ট কোড প্রতিটি নির্দিষ্ট এলাকা জন্য বরাদ্দকৃত একটি সাংকেতিক নম্বর। যেটা কোনও নির্দিষ্ট এলাকা বা অঞ্চলের ডাক ঠিকানা চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত যেকোনো মেইল এবং পার্সেল ডেলিভারির সঠিকতা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয়। পোস্ট কোড ব্যাবহার করার মাধ্যমে যেকোনো পাঠানো সামগ্রী দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানো সম্ভব হয়। ডাকঘর পোস্ট কোড মাধ্যমে নিদৃষ্ট কোনো এলাকাকে সহজে চিহ্নিত করা যায়। এসব কিছু ছাড়াও পোস্ট কোডের আরো অনেক কাজ রয়েছে।

পোস্ট কোডের ইতিহাস।

প্রথম পোস্ট কোড ব্যবহারের শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালের দিকে। যখন বিভিন্ন দেশে মেইল ডেলিভারির চাহিদা বাড়তে শুরু করে। তখন তারা সহজে নির্দিষ্ট ঠিকানা বা এলাকা চিহ্নিত করা জন্য পোস্ট কোড ব্যাবহার শুরু করে। যেটা যোগাযোগ এবং পণ্য আদান-প্রদান আরো সহজ করে তোলে। তার পরে বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট কোড ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়। তখন থেকে এখন পযন্ত এই ডাকঘর পোস্ট কোড ব্যাবহার হয়ে আসতেছে।

নিজের পোস্ট কোড কিভাবে বের করব?

অনেক ভাবেই নিজের ডাকঘর পোস্ট কোড বের করতে পারবেন। সেই মাধ্যম গুলো নিচে অনুসরণ করুন। এখানে আমরা অনলাইনের মাধ্যমে বের করা এবং NID মাধ্যমে বের করা শিখবো। তাই চুলুন আর দেরি না করে শুরু করি। আশাকরি আপনি খুব সহজেই ডাকঘর পোস্ট কোড বের করতে পারবেন।

আপনার NID কার্ডের মাধ্যমে ডাকঘরের পোস্ট কোড যাচাই।

আপনার NID কার্ড পোস্ট কোড বের করার জন্য সব চেয়ে সহজ এবং নির্ভুল একটি মাধ্যম। আপনি শুধুমাত্র আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি ওপর পৃষ্টা যেটাকে আমরা NID ব্যাক পার্ট বলে থাকি। সেখানে আপনি ভালো ভাবে খেয়াল করলে আপনার এলাকার সম্পুন্ন ঠিকানা দেখতে পাবেন। সেই ঠিকানার মধ্যে ডাকঘরের পোস্ট কোড লেখা থাকে। আপনি সহজে সেখান থাকে আপনার এলাকার ডাকঘরের পোস্ট কোড দেখে নিতে পারেন।

নিজের এলাকার ডাকঘর পোস্ট কোড বের করার নিয়ম গুলোর মধ্যে সব থেকে সহজ এই মাধ্যম। আর জন্য আপনার শুধুমাত্র একটি NID কার্ড প্রয়োজন হবে। তবে হ্যা, NID কার্ড অবশ্যই আপনার নিজের এলাকার হতে হবে।

আপনার NID কার্ডের মাধ্যমে ডাকঘরের পোস্ট কোড যাচাই।

সরকারী ডাক অধিদপ্তর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডাকঘর পোস্ট কোড যাচাই।

আপনারা যারা প্রশ্ন করে থাকেন ডাক অধিদপ্তর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের কোড কিভাবে বের করব? তাদের জন্য সমাধান। আপনাদের প্রথমে ডাক অধিদপ্তর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ঠিকানাঃ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে এখানে চাপদিন।

এই ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশ সরকারের ডাক অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানে আপনি বাংলাদেশের সব বিভাগ, জেলা এবং উপজেলার ডাকঘর পোস্ট কোড পেয়ে যাবেন। আপনাকে শুধু আপনার জেলার নামার উপরে চাপ দিতে হবে। তার পরে পেজটা লোড হওয়ার জন্য একটু অপেক্ষা করুন। এখন আপনার আপনার জেলার সব পোস্ট কোড গুলো দেখতে পাবেন। যেখান থেকে আপনি খুঁজে নিতে পারেন আপনার এলাকার পোস্ট কোড।

সরকারী ডাক অধিদপ্তর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডাকঘর পোস্ট কোড যাচাই।

ইন্টারনেটে উইকিপিডিয়া তালিকা অনুযায়ী।

আমরা উইকিপিডিয়া থেকে নিজের এলাকার পোস্ট কোড কিভাবে বের করব সেটা জেনে নেই। আপনারা যারা ইন্টারনেটের সাথে জড়িত তারা সবাই জানি উইকিপিডিয়া কি। তাই আর উইকিপিডিয়া পরিচয় নিয়ে কথা বললাম না। পৃথিবীর এবং কোনো বিষয় নেই যেটা নিয়ে উইকিপিডিয়াতে ইনফরমেশন নেই। ঠিক তেমনি বাংলাদেশর উপজেলার ডাকঘর পোস্ট কোডেরো একটি সম্পুন্ন তালিকা রয়েছে। আপনাকরা চাইলে উইকিপিডিয়া থেকে নিজের এলাকার পোস্ট কোড দেখে নিতে পারেন। ঠিকানঃ পোস্ট কোডের তালিকা পেতে খানে চাপদিন।

ইন্টারনেটে উইকিপিডিয়া তালিকা অনুযায়ী।

স্থানীয় পোস্ট অফিস থেকে পোস্ট কোড কিভাবে বের করব?

আপনার এলাকার পোস্ট অফিসে গিয়ে আপনার এলাকার পোস্ট কোড সংগ্রহ করতে পারেন। আপনি পোস্ট অফিস কর্মীকে জিজ্ঞাস করলে তারা আপনাকে সেই এলাকার পোস্ট কোড প্রদান করবে। বাংলাদেশের সব পোস্ট অফিসে তাদের পোস্ট কোডের তালিকা লাগিয়ে দেওয়া থাকে। আপনি চাইলে সেখান থেকেও দেখে নিতে পারেন।

ইউনিয়ন পোস্ট কোড কি? ইউনিয়ন পোস্ট কোড এর বিস্তারিত।

আসলে ইউনিয়ন পোস্ট বলতে আমরা বুঝতে চাই যে ডাকঘর পোস্ট কোডকে। তবে আপনাকে কে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে ইউনিয়ন পোস্ট কোড বলতে কিছু হয় না। সাধারণত প্রতিটি উপজেলার জন্য একটি করে পোস্ট কোড থাকে। এই পোস্ট কোড শুধুমাত্র ওই উপজেলার সব ডাক ঘরের জন্য বরাদ্ধ কোনো ইউনিয়নের জন্য নয়। তাই এটি ইউনিয়ন পোস্ট কোড হিসেবে ধরা যাবে না। অনেকে ভুল করে ডাকঘর পোস্ট কোড কে ইউনিয়ন পোস্ট কোড মনে করে। আসলে ইউনিয়নের জন্য নিদৃষ্ট করে কোনো পোস্ট কোড থাকে না। পোস্ট কোড শুধুমাত্র উপজেলার জন্য হয়। তবে হ্যাঁ আপনি আপনার ইউনিয়নের নাম ইউনিয়ন পোস্ট কোড বলতে পারেন।

প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য আলাদা করে ইউনিয়ন কোড থাকে সেটি ইউনিয়ন পোস্ট কোড নয়। এই কোড কে ইউনিয়ন কোড বলা হয়। এই কোডের মাধ্যমে নিদৃষ্ট করে একটি ইউনিয়ন কে খুঁজে বের করা হয়। যেমনটি আমাদের ডাকঘর পোস্ট কোডের ধাত্রে ঘটে। তাই আমরা সাধারণ ভাবে ডাকঘর পোস্ট কোড কে ইউনিয়ন পোস্ট কোড বলতে পারি।

সমাপ্তি মন্তব্য।

ডাকঘর পোস্ট কোড একটি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা যা নিদৃষ্ট কোনো এলাকা সনাক্তকরণ পদ্ধতি। এই পোস্ট কোড চিঠি, পার্সেল, এবং অনলাইন শপিং থেকে শুরু করে কুরিয়ার সার্ভিস পর্যন্ত সর্বত্র ব্যবহৃত হয়। অনেক ক্ষেত্রে এই আপনার এলাকাকে চিনতে সাহায্য করে। পোস্ট কোড ব্যবহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানার কোনো কিছু ডেলিভারি করতে সাহায্য করে এবং সময় বাঁচায়। ডাকঘর পোস্ট কোডের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে যে আপনার প্রেরিত বস্তু সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাবে এবং ডেলিভারির প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত হবে। ভুল পোস্ট কোড ব্যবহার করলে ডেলিভারিতে দেরি হতে পারে কিংবা ভুল ঠিকানায় পৌঁছাতে পারে। তাই সব সময় সঠিক ডাকঘর পোস্ট কোড ব্যাবহার করতে হবে।

আপনারা যারা বলে থাকেন নিজের পোস্ট কোড কিভাবে বের করব তাদের জন্য এই পোষ্টে আমার বেশ কিছু সমাধান দিয়েছি। আপনি যদি এই ধাপ গুলো ভালো ভাবে অনুসরণ করেন তাহলে আপনি সহজেই পোস্ট কোড বের করতে পারবেন। তাই ভালো ভাবে মনোযোগ দিয়ে এই পোষ্টি পড়ুন। আশাকরি আপনি সহজে নিজের পোস্ট কোড কিভাবে বের করতে পাবেন।

কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

মানুষ আমাদের প্রায় যে প্রশ্ন গুলো করে থাকে সেই প্রশ্ন গুলি এবং উত্তর।

একটি এলাকার একাধিক পোস্ট কোড থাকতে পারে কি?

হ্যাঁ, বড় এলাকায় একাধিক পোস্ট অফিস থাকলে বিভিন্ন পোস্ট অফিসের জন্য আলাদা পোস্ট কোড থাকতে পারে। তবে এটি খুবই কম। বাংলাদেশে মাত্র কিছু এলাকায়।

পোস্ট কোডের সাধারণ ফর্ম্যাট কেমন?

বাংলাদেশে পোস্ট কোড সাধারণত ৪ সংখ্যার হয়ে থাকে। যেমন: ঢাকার জন্য পোস্ট কোড হতে পারে ১২১৫, ১২০৭ ইত্যাদি।

প্রতিটি উপজেলার জন্য কি আলাদা-আলাদা পোস্ট কোড থাকে?

হ্যাঁ, প্রতিটি উপজেলার জন্য কি আলাদা-আলাদা পোস্ট কোড থাকে। কোনো উপজেলার ডাকঘর পোস্ট কোড অন্য কোনো উপজেলার ডাকঘরের সাথে মিলবে না।

পোস্ট কোড এবং জিপ কোডের মধ্যে পার্থক্য কী?

পোস্ট কোড এবং জিপ কোডের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তবে “জিপ কোড” শব্দটি ইংরেজি এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত হয়।

পোস্ট কোড পরিবর্তন করা যায় কি?

সাধারণত পোস্ট কোড পরিবর্তন হয় না। তবে কোনো এলাকায় নতুন ডাকঘর স্থাপন হলে সেখানে নতুন পোস্ট কোড হবে।

পোস্ট কোড কি শুধুমাত্র চিঠি পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হয়?

না, পোস্ট কোড চিঠি ছাড়াও কুরিয়ার সার্ভিস, অনলাইন শপিং, এবং অন্যান্য পণ্য ডেলিভারির ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। এটি সঠিক ঠিকানা সনাক্ত করতে সাহায্য করে।

ভালো লাগলে আমাদের এই ব্লগ পোষ্টটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। OurBD Team কে আরো ভালো ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করতে অনুপ্রাণিত করুন।
ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন।